বিশেষ প্রতিনিধি, বিশেষ প্রতিনিধি।।

আবারও কানাডা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, তার প্রস্তাবিত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গোল্ডেন ডোমে কানাডা বিনামূল্যে যুক্ত হতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে তিনি শর্ত জুড়ে দেন। বলেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হিসেবে এতে যোগ দিতে পারবে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

এ বছর জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর গ্রিনল্যান্ড, গাজা, কানাডা দখল করে নেয়ার খায়েশ প্রকাশ করেন ট্রাম্প। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অভিন্ন সীমান্ত আছে কানাডার। তাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ নিয়ে কানাডার সঙ্গে তার সম্পর্কে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি তিনি গোল্ডেন ডোম প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। তাতে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে কানাডা। তারা বলেছে, গোল্ডেন ডোমে কানাডা যুক্ত হতে চায়, তবে কোনোভাবে সার্বভৌমত্বকে হারিয়ে নয়। এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হলেই কেবল গোল্ডেন ডোমে যুক্ত হতে পারবে কানাডা। ট্রাম্প বলেন, কানাডা যদি যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হতে না চায়, তাহলে এই প্রকল্পের অংশ হতে তাদের খরচ হবে ৬১০০ কোটি ডলার। ট্রাম্প তার সামাজিক নেটওয়ার্ক ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে বলেছেন, কানাডা গোল্ডেন ডোম সিস্টেমে যুক্ত হওয়ার খুব আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমি তাদেরকে বলেছি যে, যদি তারা আলাদা হিসেবে একটি জাতি হিসেবে থেকে যায় তাহলে তাদের খরচ হবে ৬১০০ কোটি ডলার। কিন্তু তারা যদি যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হয় তাহলে এই খরচ শূন্য ডলার হবে। এখন তারা এসব প্রস্তাব বিবেচনা করছে। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পর কানাডার তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, এক সপ্তাহ আগে গোল্ডেন ডোম সিস্টেম পরিকল্পনা প্রকাশ করেন ট্রাম্প। বলেন, এতে খরচ হতে পারে ১৭৫০০ কোটি ডলার। ২০২৯ সালে তার মেয়াদ শেষের দিকে পরিচালনায় যেতে পারে এই প্রকল্প।  তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই স্কিমটি বিপুল পরিমাণ প্রযুক্তি ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। ট্রাম্প লক্ষ্য অর্জনের জন্য যে খরচের কথা বলেছেন তার চেয়ে খরচ অনেক বেশি হতে পারে। ট্রাম্প যখন বলেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত হওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে কানাডা, তখন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনি এটা নিশ্চিত করেন যে- তার দেশ এ ইস্যুতে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করছে। নর্থ আমেরিকান এরোস্পেস ডিফেন্স কমান্ডের (নোরাড) মাধ্যমে আন্তঃমহাদেশীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অংশীদার ন্যাটো সদস্য কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য দাবি করায় সম্প্রতি এই দুটি দেশের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনি ভদ্রোচিতভাবে এবং দৃঢ়তার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হওয়ার বিষয়ে ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি এ মাসের শুরুর দিকে হোয়াইট হাউস সফর করেন। তখন ট্রাম্পকে জানিয়ে দেন, তার দেশ কখনো বিক্রির জন্য নয়।